প্রকাশিত: ২৪/০২/২০১৭ ১১:০০ এএম

নিউজ ডেস্ক::

নাফ নদীর দুই পাড়েই নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গা। কোন পাড়ে শারীরিক কোন পাড়ে মানসিক। ‘যুদ্ধময়’ পরিবেশ থেকে ফিরে কোন কিছুই বাছ-বিচার করতে পারে না তারা। বাঁচার তাগিদের যে যাই বলে তাই করে আর এর মধ্য সুবিধা নিচ্ছে একদল অসাধু লোক যারা বিয়ের নামে দুর্বলতার সুযোগ গ্রহণ করছে। শুধুমাত্র মৌখিক ‘আমিন’ বলে বিয়ে করে ভোগ করছে অনেকে।

বিয়ের গোপন উৎসবে মেতেছে রোহিঙ্গা ক্যাম্প। আর স্থানীয় তরুণদের নিয়ে চিন্তিত তাদের আত্মীয় স্বজন। বিয়ের কারণ একটায় আশ্রয় লাভ করা। মিয়ানমারে বর্বর হামলা চলাকালে দুইভাবে এই সুবিধা নিয়েছে সুবিধাভোগী মানুষ। প্রথম একদল যুবককে দেখা যায় যারা বিভিন্ন সময় মিয়ানমার আর্মির বিপরীতে ‘যুদ্ধ’ করছে যাদেরকে মিয়ানমার আর্মি ‘জঙ্গি’ হিসেবে দাবী করছে। আরাকান রাজ্য বসবাস করতে হলে তাদের সাথে কাঁধে কাধ মিলিয়ে অস্ত্র ধরতে হবে, সেই অসুবিধা দেখিয়ে অনেকে ওদের নিয়ে পাড়ি জামাচ্ছে বাংলাদেশে যদিও এখন একটু কম। তারাও বিয়ের প্রলোভন দেখাচ্ছে। দুই, আরেকদল আছে যারা নৌকায় করে রোহিঙ্গাদেরকে এই পারে তথা বাংলাদেশের এই পাড়ে নিয়ে আসছে বর্ডার গার্ডকে ফাঁকি দিয়ে। যতক্ষণ পর্যন্ত নৌকায় থাকে সেই অল্প সময়য়ে তাদের সাথে এই দেন দরবার চলে। এই অল্প সময়েও অনেকে মৌখিক বিয়ে করে ফেলে। অনেকে আবার নির্যাতনের শিকার হয়। তৃতীয়, যারা সাময়িক সময়য়ের জন্য আশ্রয় নেয় রোহিঙ্গা ক্যাম্প। সময় হতে পারে এক রাত কিংবা একদিন, সেসব ঘরগুলোতে আশ্রয় নেয় সেখানে ছেলে মেয়ে মিলে ১০/১২ জনের বসবাস। সেখানে এই প্রস্তাব থেকে রেহায় পায় না তারা। চতুর্থ, যারা কোন আশ্রয় পায় তাদের উপর শুরু হয় নানা হুমকি দমকি যাতে বিয়ে করে।

যারা এইসব কার্যকলাপে লিপ্ত তাদের একটি অংশ আরাকানের অধিবাসী তথা রোহিঙ্গা আরেকটি অংশ বাংলাদেশি। সরেজমিনে দেখা যায়, অনেকে নজরদারি করছে কখন কার বাসায় সুন্দরী কোন মেয়ে আসছে। দুটি কারণে তারা বিয়েতে রাজি হয় এক, নাগরিকত্ব, দুই, ফেরত পাঠানোর ভয়। যাদের বাসায় আশ্রয় নিয়েছে তারাও তাঁদের ঘর রক্ষা করার জন্য এই কাজে লিপ্ত। যারা বিয়ে করছে তাদের সবাই বাংলাদেশি আর কিছু অংশ আরাকানবাসী। যেমন যে অনেক আগে বাংলাদেশে বসবাস করছে যে অনেকটায় পাকাপুক্ত হয়ে গেছে যারা দুই তিনটা করে বিয়ে করে রাখছে। টেকনাফের লেদা ক্যাম্পে গিয়ে এই অবস্থা দেখা যায়। কেউ দেখতে গেলে তাদেরকে নিকট আত্মীয় বলে জানান। বেশিভাগ বিবাহিত পুরুষরায় এইকাজে লিপ্ত। যারা বাংলাদেশি তারাও বেশির ভাগ টেকনাফের আশাপাশে অঞ্চলের। তারা বিয়ে করে ক্যাম্প জায়গা দিয়ে রেখে দিচ্ছে।

আব্দুল করিম নামে এক ব্যক্তির ৩টি বউ আছে ক্যাম্পে। সে মাঝে মাঝে যায়। তার আবার বাংলাদেশি স্ত্রীও আছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টেকনাফের এক এক ইউপি সদস্য বলেন, এই ঘটনা অহরহ ঘটছে, আমাদের ছেলে মেয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে দিন দিন। শুধু বিয়ে নয় এদের মাধ্যমে মাদক সেবন ও বাড়ছে দিন দিন। দীর্ঘ অনেক বছর ধরে চলমান আন্তর্জাতিক সমস্যা হিসেবে পরিচিতি লাভ করা রোহিঙ্গা সমস্যা ২০১২ সালে নতুন করে নাড়া দিয়েছিল এক রাখাইন তরুণীকে ধষণ-হয়রানী করে হত্যার অভিযোগে তখনও অনেক নারী শিশু পালিয়ে এসেছিল বাংলাদেশে। তারপর ২০১৬ সালে অস্ত্র লুণ্ঠনের অভিযোগে আবার। এইবার বিশ্ব গণমাধ্যম নাড়া দেয়। আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর চাপে কিছুটা হলেও শীতিল হতে শুরু করে কিন্তু বরাবরে এই সমস্যার ভুক্তভোগী রাষ্ট্র বাংলাদেশ। যৌন হয়রানির শিকার হওয়া নারী, ১২/১৩ বছরের শিশুও বাল্যবিবাহে লিপ্ত। বিয়ে একমাত্র বাঁচার উপায় তাঁদের। জীবনের এমন সময়ে মৌলিক অধিকার বলতে কি তাও জানে না তারা শুধু বাঁচতে চায় কোনমতে। অনেকে আর ফিরে না যাওয়ার কথা বলেন বিশেষ করে যারা তাঁদের আপন পিতা মাতার লাশ দেখেছেন।

 

সুত্র- বিডি মর্নিং

পাঠকের মতামত

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে ট্রাকের ধাক্কায় নিহত ১

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের সাতকানিয়ার ঠাকুরদিঘি এলাকায় লবণবাহী ট্রাকের ধাক্কায় এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। নিহতের নাম ...

জাসদ কার্যালয়ের জায়গায় ‘শহীদ আবু সাঈদ জামে মসজিদ’ নির্মাণের ঘোষণা

বগুড়া শহরের জিরো পয়েন্ট সাতমাথা সংলগ্ন এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতে ভেঙ্গে ফেলা জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ-ইনু) ...

বাড়ছে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ, আটক ৩৩

বান্দরবানের আলীকদম সীমান্তে বাড়ছে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সংখ্যা। আজও বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকালে শিশুসহ ৩৩ মিয়ানমারের নাগরিককে আটক ...